কিডনি রোগের পরিমাণ দিনে দিনে বেড়েই চলেছে যা বর্তমান সময়ে আশঙ্কাজনক রূপ ধারণ করেছে। কিডনি যখন তার স্বাভাবিক কাজগুলো করতে ব্যর্থ হয় তখন কিডনি জনিত বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। কিডনি রোগের ঔষধের নাম কি হতে পারে বা কিডনি রোগ নিরাময়ের ক্ষেত্রে কি কি চিকিৎসার প্রয়োজন, এ সম্পর্কে আমাদের সঠিক জ্ঞান থাকা প্রয়োজন।
তবে কিডনি রোগের ঔষধের নাম জানার আগে আমাদের যে বিষয়টি আগে জানতে হবে সেটি হচ্ছে কেউ রোগের মূল কারণ গুলো কি কি।
কিডনি রোগের মূল কারণ সমূহ:
মূলত বিভিন্ন কারণে কিডনির রোগ হয়ে থাকে। চলুন জেনে নিই কিডনি রোগের প্রধান কারণ গুলি-
- উচ্চমাত্রার রক্তচাপ
- দীর্ঘদিন যাবৎ অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস
- কিডনির ফিল্টার সিস্টেম এর অস্বাভাবিকতা
- শ্বেত রক্তকণিকার মাত্রাতিরিক্ত উৎপাদন
- অনবরত প্রস্রাব অবরুদ্ধ
- কিডনিতে রক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতা
- কিডনিতে পানির থলির উপস্থিতি ইত্যাদি।
কিডনি রোগের চিকিৎসা: কিডনি রোগের ঔষধের নাম কি হতে পারে?
কিডনি রোগের লক্ষণ গুলো যদি আপনি উপলব্ধি করতে পারে তাহলে সে সঙ্গে সঙ্গে আপনাকে একজন ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে। উপযুক্ত চিকিৎসার জন্য আপনার ডাক্তার আপনাকে বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে দিতে পারেন যেমন:
১. কিডনি আল্ট্রাসাউন্ড
২. জিএফআর
৩. মূত্র বিশ্লেষণ পরীক্ষা
৪. কিডনি বায়োপসি পরীক্ষা
৫. সিটি স্ক্যান
৬. রক্তের ক্রিয়েটিনিন বিশ্লেষণ
৭. এমআরআই স্ক্যান পরীক্ষা
সঠিক সময়ে কিডনি রোগের লক্ষণ গুলো যদি নির্ণয় করা যায় তাহলে এই রোগ অবশ্যই নিরাময়যোগ্য। বিভিন্ন অন্তর্নিহিত সমস্যার কারণে কিডনি জনিত রোগ গুলো মানবদেহে বিরাজ করে। কিডনি রোগের সফল চিকিৎসা সকল রোগীদের জন্য প্রযোজ্য নয়। অর্থাৎ, রোগের মাত্রার উপর ভিত্তি করে চিকিৎসা প্রদান করা হয়।
চলুন জেনে নেয়া যাক কিডনি রোগের কার্যকরী কিছু চিকিৎসা সম্পর্কে:
- নেফ্রস্টমি
এই পদ্ধতিতে কিডনিতে অবরুদ্ধ প্রশাসনিক ক্ষেত্রে খুবই কার্যকরী হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। কিডনি সকল প্রকার ব্লকেরস পরিষ্কার করার জন্য এই পদ্ধতিটি খুবই ফলপ্রসু ফলাফল দিয়ে থাকে।
- অ্যান্টিবায়োটিক থেরাপি
কিডনিজনিত সকল সমস্যা সমাধানের জন্য রক্তের এবং কিডনির ভিতরে কোন ব্যাকটেরিয়া উৎপন্ন হয় এই ব্যাকটেরিয়াগুলোকে নির্মূল করার জন্য অ্যান্টিবায়োটিক থেরাপি প্রযোজ্য। ডক্টর আপনার কিডনির অবস্থান অনুযায়ী এই অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করার পরামর্শ দেবেন।
- লিথোপ্রিপসি থেরাপি
কিডনিতে যদি বড় বড় পাথরের জন্ম নেয় তাহলে সে ক্ষেত্রে এই থেরাপি টি ব্যবহার করা হয়। থেরাপির মাধ্যমে পাথরগুলোকে ছোট ছোট টুকরা পরিণত করা হয় যা খুব সহজেই মূত্রনালীর মধ্য দিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসে।
- ডায়ালাইসিস পদ্ধতি
ডায়ালাইসিস মূলত কিডনি শেষ পর্যায়ের একটি ব্যবস্থা। কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য যখন কোন ব্যবস্থা করা সম্ভব হয় না তখন এই ডায়ালাইসিস পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। এটি মূলত কিছুদিন পরপর বা সাতদিনে একবার করা হয়।
ডায়ালাইসিস মূলত দুই প্রকারের হয়ে থাকে: হোমো ডায়ালাইসিস এবং পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস।
- কিডনি প্রতিস্থাপন পদ্ধতি
কিডনি প্রতিস্থাপন পদ্ধতি হচ্ছে কিডনি অকার্যকর হওয়ার পরের ব্যবস্থা। এই পদ্ধতির মাধ্যমে একজন কিডনি অকার্যকর ব্যক্তিকে অন্য একজন দাতার কাছ থেকে প্রাপ্ত একটি স্বাস্থ্যকর কিডনির মাধ্যমে জীবন দান করা হয়।
উপরিউক্ত চিকিৎসার পাশাপাশি চলুন জেনে নেই কিভাবে আপনি কিডনি সুরক্ষার ক্ষেত্রে ঘরোয়া চিকিৎসা করতে পারেন-
১. বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থের মাধ্যমে তৈরি খাদ্যদ্রব্য থেকে দূরে থাকতে হবে।
২. দীর্ঘদিন এর মারাত্মক ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
৩. হাই প্রেসার কে অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
৪. যদি শরীরের কোন স্থানে কোন ক্যান্সার ধরা পড়ে তাহলে সেটা কে দীর্ঘস্থায়ী করা যাবে না।
৫. শরীরকে অবশ্যই হাইড্রেট রাখার চেষ্টা করতে হবে। অর্থাৎ, পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
সবধরনের অর্গানিক ফুড, ২০০+ আয়ুর্বেদ ঔষধ ও খেলার সামগ্রী ঘরে বসেই অর্ডার করুন হেলদি-স্পোর্টস শপ থেকে- https://shop.healthd-sports.com
শেষ কথা
কিডনি রোগের ঔষধের নাম কি? আমরা ইতিমধ্যে জেনে গেছি যে, কিডনির অবস্থার উপর ভিত্তি করে চিকিৎসকরা কিডনির চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রদান করে থাকেন।
কিডনিজনিত সমস্যা গুলোর লক্ষণ দেখা দেওয়ার সাথে সাথে পর্যাপ্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। সঠিক সময়ে চিকিৎসা এবং ঔষধ গ্রহণ এর মাধ্যমে কিডনি জনিত রোগ নিরাময় যোগ্য।
আপনার মনে কোন প্রশ্ন থাকলে এখানে ক্লিক করুন!