খুশদীলের ঝড়ো ইনিংসে তৃতীয় ভিক্টোরির দেখা পেল ভিক্টোরিয়ান্স!
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ১৭তম ম্যাচে আজ মুখোমুখি হয়েছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও ঢাকা ডমিনেটরস। এর আগে চার ম্যাচে তিনটি হার ও একটি জয় ছিল ঢাকার এবং পাঁচ ম্যাচে তিনটি হার ও দুইটি জয় ছিল কুমিল্লার।
চট্টগ্রামে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে টসে জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেয় ঢাকার অধিনায়ক নাসির হোসেন। কুমিল্লার পক্ষে ওপেনিংয়ে নামে লিটন দাস ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। গত দুই ম্যাচে অসাধারণ পারফরমেন্স করা লিটন আজকে জ্বলে উঠতে ব্যর্থ হয়। প্রথম ওভারে বোলিংয়ে এসে দ্বিতীয় বলেই লিটনকে সাজঘরে ফেরায় তাসকিন আহমেদ। শূন্য রান নিয়েই ফিরতে হয় লিটনকে।
এরপর ইমরুল কায়েস ও মোহাম্মদ রিজওয়ান দলকে এগিয়ে নিতে থাকে। তবে তাদের জুটি দ্রুতই ভেঙে দেয় নাসির হোসেন। ২৬ বলে ৩৩ রানের ইনিংস খেলে রবিন দাসের হাত বন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরে ইমরুল কায়েস।
এরপর জনসন চার্লস কিছুক্ষণ রিজওয়ানকে সঙ্গ দিলেও তাকেও দ্রুতই ফিরতে হয়। ১৯ বলে ২০ রান করে চার্লস ফিরলে ক্রিজে আসে খুশদীল শাহ্। এসেই মারকুটে ব্যাটিং শুরু করেন। তার ব্যাটিংয়ের সামনে ঢাকার কোন বোলারই দাঁড়াতে পারছিল না।
খুব শীঘ্রই হাফ সেঞ্চুরিও করে ফেলে খুশদীল শাহ্। অবশেষে খুশদীলকে থামাতে সক্ষম হয় সৌম্য সরকার। তবে ততক্ষণে বড় ড্যামেজ করে ফেলেছে খুশদীল। ২৪ বলে ৬৪ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে খুশদীল শাহ্। তার ইনিংসে ঋিল ৭ টি চার ও ৫ টি ছক্কা!
খুশদীল ও রিজওয়ানের অসাধারণ ইনিংসে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৪ উইকেট হারিয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৮৪ রান। ৪৭ বলে ৫৫ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিল মোহাম্মদ রিজওয়ান। ঢাকার পক্ষে তাসকিন, নাসির, ইমরান ও সৌম্য একটি করে উইকেট শিকার করে।
১৮৫ রানের টার্গেট নিয়ে মাঠে নামে ঢাকা ডমিনেটরস। ঢাকার পক্ষে ওপেনিংয়ে মাঠে নামে শেহজাদ আহমেদ ও সৌম্য সরকার। দ্বিতীয় ওভারেই সৌম্য সরকারকে তুলে নেয় হসান আলী। শূন্য রানে সাজঘরে ফিরে সৌম্য। এরপর রবিন দাসও শূন্য রানে আউট হলে বেশ চাপে পড়ে যায় ঢাকা।
আরেক ওপেনার শেহজাদ আহমেদ কিছুটা এগিয়ে নিতে চেষ্টা করলেও খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি। ১৭ বলে ১৯ রানের ইনিংস খেলে রান আউটের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে শেহজাদ। মাত্র ৩৪ রানে তিন উইকেট হারিয়ে সাবধানে খেলতে শুরু করে ঢাকা।
মোহাম্মদ মিথুন ও নাসির হোসেন আস্তে ধীরে দলকে এগিয়ে নিতে থাকে। কিন্তু রান রেট ক্রমেই কমতে থাকে। তখন রান এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা শুরু করে মিথুন। মোসাদ্দেক হোসেনের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ইমরুল কায়েসের হাত বন্দি হয়ে ৩৪ বলে ৩৬ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে মোহাম্মদ মিথুন। এরপর নাসির হোসেনও আগ্রাসী ব্যাটিং শুরু করে।
দ্রুতই হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেয় নাসির। অন্য প্রান্তে আরিফুল হকও সঙ্গ দিচ্ছিল নাসিরকে। তবে আগে তৈরি হওয়া রানের দূরত্ব আর কমানো সম্ভব হয়না।
নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৪ উইকেট হারিয়ে ঢাকা ডমিনেটরসের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৫১ রান। এতে ৩৩ রানের বিশাল পরাজয় হয় ঢাকার। ৪৫ বলে ৬৬ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিল নাসির হোসেন।
অপর প্রান্তে ১৭ বলে ২৪ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিল আরিফুল হক। কুমিল্লার পক্ষে হাসান আলী, তানভীর ইসলাম ও মোসাদ্দেক হোসেন একটু করে উইকেট নেয়।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স – ১৮৪/৪ (২০)
খুশদীল শাহ্ ৬৪ (২৪)
মোহাম্মদ রিজওয়ান ৫৫ (৪৭)
ইমরুল কায়েস ৩৩ (২৬)
সৌম্য সরকার ১/৮
নাসির হোসেন ১/১৬
ঢাকা ডমিনেটরস – ১৫১/৪ (২০)
নাসির হোসেন ৬৬ (৪৫)
মোহাম্মদ মিথুন ৩৬ (৩৪)
আরিফুল হক ২৪ (১৭)
তানভীর ইসলাম ১/১২
মোসাদ্দেক হোসেন ১/১৫
